আজ- ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ শনিবার  রাত ৮:১০

নাবালিকার সাথে পঞ্চাশোর্ধ’র বিয়ে নিয়ে তোলপাড়!

 

দৃষ্টি নিউজ:

টাঙ্গাইলে দরিদ্র পরিবারের ১৪ বছরের নাবালিকার সাথে পঞ্চাশোর্ধ সিরাজুল ইসলামের বিয়ে নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি রাতে কাবিন-রেজিস্ট্রি ও বিয়ে হওয়ার কয়েকদির পর ঘটনাটি জানাজানি হয়। পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় স্থানীয় পর্যায়ে ঘটনাটি ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে।


জানা যায়, টাঙ্গাইল সদর উপজেলার কাকুয়া ইউনিয়নের রাঙাচিরা গ্রামের দিনমজুর ফজল মিয়ার পরিবার হতদরিদ্র। তিনি চার মেয়ে ও দুই ছেলের জনক। পারিবারিক অসচ্ছলতার কারণে ছেলে-মেয়েদের পড়ালেখা করাতে পারেন নি।

পক্ষান্তরে একই উপজেলার দাইন্যা চৌধুরী গ্রামের ফজলুল হকের ছেলে সিরাজুল ইসলাম বিবাহিত। তার স্ত্রী ও এক ছেলে রয়েছে। তিনি ওই এলাকায় ক্লাব ভিত্তিক একটি এনজিও পরিচালনা ও একটি মনোহরী দোকান করেন। দরিদ্রতার সুযোগ নিয়ে সিরাজুল ইসলাম গত ২৫ ফেব্রুয়ারি রাতের আঁধারে ফজল মিয়ার অপ্রাপ্ত বয়ষ্ক মেয়েকে বিয়ে করেন। তবে বিয়েটি দুই পক্ষের সম্মতিতেই হয়েছে।

সিরাজুল ইসলামের এটা দ্বিতীয় বিয়ে। এ বাল্য বিয়ের কাবিন-রেজিস্ট্রি করেন স্থানীয় নিকাহ রেজিস্ট্রার (কাজী) মাওলানা আশরাফ আলীর সহকারী আমিরুল ইসলাম।


এদিকে, এ বাল্য বিয়ের খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় প্রচার হয়- মেয়েটির বাবা সিরাজুলের কাছে থেকে ঋণ নিয়েছেন। সেই ঋণের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় স্থানীয় প্রভাবশালীদের সহযোগিতায় পঞ্চাশোর্ধ সিরাজুল ইসলামের কাছে মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন।


সিরাজুল ইসলামের ছোট ভাই আমিনুল ইসলাম জানান, তার ভাবী দীর্ঘদিন ধরে শারীরিকভাবে অসুস্থ। তিনি অসুস্থ থাকায় পারিবারিকভাবে তার ভাই সিরাজুল ইসলামকে বিয়ে করানো হয়েছে। নাবালিকা মেয়েটির পরিবার খুবই দরিদ্র। দুই পক্ষের সম্মতিতে বিয়েটি হয়েছে। তবে মেয়ের বয়স কম থাকায় কিছুটা গোপণীয়তা রক্ষা করা হয়েছে।


স্থানীয় ইউপি সদস্য সোলাইমান মন্ডল ওরফে সমু মন্ডল জানান, বিষয়টি জানার পর তিনি মেয়েটির বাড়িতে গিয়েছিলেন। আগে জানলে তিনি এ বাল্য বিয়ে হতে দিতেন না।


নাবালিকা মেয়েটির পরিবার জানায়, অভাব-অনটনের কারণে সিরাজের সঙ্গে ওই মেয়েকে বিয়ে দেওয়া হয়েছে। দুই পক্ষের সম্মতিতে বিয়েটি হয়েছে। ৫৫ বছর বয়সী ওই ব্যক্তির সঙ্গে নাবালিকা মেয়ের বিয়ে দেওয়াটা ঠিক হয়নি। কিন্তু অভাবের সংসার তাই তারা বিয়ে দিয়েছেন।


নিকাহ রেজিস্ট্রারের সহকারী আমিরুল ইসলাম জানান, নাবালিকা মেয়েটির সাথে সিরাজুলের বিয়ে তিনিই রেজিস্ট্রি করেছেন। তারা মেয়েটির বয়সের কোনও কাগজপত্র দিতে পারেনি। তবে দেখতে সাবালিকাই মনে হয়েছে। পরে দুপক্ষের অনুরোধে এক পর্যায়ে বিয়ের রেজিস্ট্রি করেছেন।


কাকুয়া ইউপি চেয়ারম্যান আতাউর রহমান জিন্নাহ জানান, বয়ষ্ক লোকের সাথে নাবালিকার বিয়ে হওয়ার ঘটনাটি তিনি জানতে পেরে ইউপি সদস্যকে পাঠিয়ে খোঁজখবর নিয়েছেন। মেয়েটি খুবই গরিব পরিবারের সন্তান। তাছাড়া হতদরিদ্র পরিবারের চার বোনের মধ্যে একজনের বিয়ে হয়েছে।


টাঙ্গাইল সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার রানুয়ারা খাতুন জানান, নাবালিকার সাথে এক বয়ষ্ক ব্যক্তির গোপনে বিয়ে হয়েছে। এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে ঋণ কিংবা সুদের টাকার চাপে বিয়ে হয়েছে কি-না তা তিনি নিশ্চিত নন।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে

 
 
 
 
 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক : মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল
আশ্রম মার্কেট ২য় তলা, জেলা সদর রোড, বটতলা, টাঙ্গাইল-১৯০০।
ইমেইল: dristytv@gmail.com, info@dristy.tv, editor@dristy.tv
মোবাইল: +৮৮০১৭১৮-০৬৭২৬৩, +৮৮০১৬১০-৭৭৭০৫৩

shopno