আজ- ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ শুক্রবার  রাত ৮:২৫

স্বাগত ২০২১

 

সাখাওয়াত হোসেন :

পূর্বাকাশে রক্তিম আভা ছড়িয়ে উঁকি দিয়েছে নতুন বছরের প্রথম সূর্য। নানা প্রাপ্তি আর ব্যর্থতার সাক্ষী হয়ে মহাকালের অতল গর্ভে বিদায় নিয়েছে ২০২০ সাল। আজ নববর্ষ।

শুরু হলো খ্রিষ্টীয় ২০২১ সালের পরিক্রমা। বিগত বছরের নানা ব্যর্থতার গ্লানি ভুলে নতুন স্বপ্নে জীবন সাজানোর প্রত্যাশায় বুক বেঁধেছে গোটা জাতি। উন্নয়নের সিঁড়িতে দেশকে আরও একধাপ এগিয়ে নিতে উন্মুখ দেশ গড়ার কারিগররা।

মরণ ব্যাধি করোনাভাইরাসের কারণে আগামীতে দেশের সামগ্রিক অর্থনীতি কতটা শক্তিশালী থাকবে তা নিয়ে গোটা দেশবাসী রয়েছে চরম দুশ্চিন্তায়। বিশেষ করে এ মহামারিতে আকস্মিক বেকার হয়ে পড়া লাখো মানুষের কর্মসংস্থানে নতুন বছরে সরকার কতটা সফল হবে- তা নিয়ে উদ্বিগ্ন অনেকেই।

নতুন বছরে নানা আশঙ্কার মাঝে আশার আলোও একেবারে কম নেই। অর্থনীতি সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০৩০ সালের মধ্যে ৫০ বিলিয়ন ডলারের শক্তিশালী রিজার্ভ গড়ার লক্ষ্য অর্জনের কাছাকাছি ২০২১ সালেই পৌঁছে যাবে বাংলাদেশ। শতভাগ বিদ্যুতায়নের লক্ষ্য নির্ধারণ করা আছে এ বছরেই।

সমাপ্তি হবে সরকারের মেগা প্রকল্পগুলোর মধ্যে ২টি প্রকল্পের। এছাড়া মুজিববর্ষ উপলক্ষে সরকারের বড় কর্মসূচির অংশ হিসেবে দেশের ৮ লাখ ৮২ হাজার ৩৩টি ঘরহীন পরিবারকে আধপাকা টিনশেড ঘর নির্মাণ করে দেওয়ার যে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে তা নতুন বছরের ১৭ মার্চের মধ্যেই সম্পন্ন হবে।

এদিকে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, করোনার প্রলয়ঙ্করী ঝড়ে দেশের অর্থনীতি আরও ক্ষতিগ্রস্ত হলে রাজনীতি ও আইনশৃঙ্খলার পাশাপাশি সার্বিক পরিস্থিতিতে নানা সংকট সৃষ্টি হবে।

কর্মহীন মানুষ চুরি-ডাকাতি-ছিনতাই ও প্রতারণাসহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়বে। দেশে বিলুপ্তপ্রায় ‘ক্যাডার পলিটিক্স’ নতুন করে চাঙ্গা হয়ে উঠবে। রাজনীতিতে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের কদর ফের বাড়বে। যা দেশের সার্বিক পরিস্থিতির জন্য অশনিসংকেত হয়ে দাঁড়াবে।

অন্যদিকে ১৬ কোটি বাঙালির চাওয়া, চেতনায় জাগ্রত আবহমান সেই মাঙ্গলিক বোধ অতীতের জীর্ণতা অতিক্রান্ত দিনমাসপঞ্জির হিসাব ডুবে যাক বিস্মৃতির কালগর্ভে; নতুন দিনের সূর্যালোকে উদ্ভাসন হোক সবুজ-সজীবতা। মুছে যাক অপ্রাপ্তির বেদনা; নতুন প্রত্যয়ে জেগে উঠুক নতুন সম্ভাবনার পথে এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা।

মুক্তিযুদ্ধের গৌরবে উদ্ভাসন এ স্বাধীন জাতি-রাষ্ট্রের এটাই হোক একাট্টা প্রত্যাশা। গতি পাক সমাজের অগ্রসরতার ঘূর্ণায়মান চাকা। রঙিন হয়ে উঠুক সবার জীবনে। সুস্থ রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে সমৃদ্ধ হোক বাংলাদেশ। নতুন বছরের সূর্যের আলোয় জ্বলে উঠুক শুভবোধ, মঙ্গল ও কল্যাণের আলো।

বাংলায় আমাদের একটি নিজস্ব বর্ষপঞ্জি রয়েছে। আমাদের কৃষিপ্রধান ষড়ঋতুর দেশে চাষাবাদ ও ঋতুপরিক্রমার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ এই বছরের শুরু হয় বৈশাখে। সে অর্থে বাঙালিজীবনে নতুন বছর বরণের আমজনতার যে বিপুল উৎসব, তা পালিত হয় পহেলা বৈশাখেই। ওই বর্ষবরণ উৎসব পরিণত হয়েছে বাঙালি সংস্কৃতির অন্যতম প্রধান উপাদানে।

আধুনিক মানুষের জীবনযাত্রা নির্বাহের বহুমুখী কার্যক্রম কেবল দেশের গণ্ডিতে সীমাবদ্ধ নয়। সে কারণেই বৃহত্তর আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে যোগাযোগ, আদান-প্রদানের নিমিত্তে একটি বৈশ্বিক দিনপঞ্জিকা অনুসরণ। তাই অন্যান্য দেশের মতো আমাদের দেশেও গ্রেগরিয়ান বর্ষপরিক্রমা অনুসৃত হয়।

প্রাত্যহিক জীবনযাত্রার প্রয়োজনে গ্রেগরিয়ান বর্ষপঞ্জি অনুসরণ করায় বছর শেষে যেমন বিগত দিনগুলোর হিসাবনিকাশ, ঘটনাপঞ্জির স্মরণে সালতামামির বিষয় বিশেষ গুরুত্ব পায়, তেমনই নতুন বছরের কর্মপরিকল্পনাও করতে হয়।

যোগাযোগ মাধ্যমের অভূতপূর্ব উন্নয়নের ফলে সারাবিশ্ব এখন এক বিশাল অভিন্ন গ্রামে রূপান্তরিত। নানা দেশ ও জাতির সংস্কৃতির একটি মিথস্ক্রিয়ার প্রক্রিয়া ক্রমান্বয়েই প্রবল হয়ে উঠছে। ভালো কি মন্দ- সে প্রশ্ন ভিন্ন। আমরাও এর প্রভাবমুক্ত নই।

খ্রিষ্টীয় বর্ষবিদায় ও নববর্ষ বরণ উপলক্ষে ৩১ ডিসেম্বর রাতে উল্লাস করার পশ্চিমা রীতির রেওয়াজ অধুনা আমাদের দেশেও নাগরিক পরিমণ্ডলে চালু হয়েছে। অনেক সময় এ উল্লাস মাত্রা ছাড়ানোরও নজির রয়েছে। তাই এ ক্ষেত্রে করা হয় কড়াকড়ি নিয়ন্ত্রণ- যা গত কয়েক বছরের মতো ছিল এবারও।

নতুন বছরে প্রিয়জনদের শুভেচ্ছা জানিয়ে সুদৃশ্য কার্ড পাঠানোর রীতি বহু দিনের। সম্প্রতি মুঠোফোনের প্রচলন সুবিস্তৃত হওয়ায় দোকান থেকে কার্ড কিনে ডাকঘরে গিয়ে তা পাঠানোর প্রক্রিয়া এই ব্যতিব্যস্ততার যুগে অনেকের কাছেই ঝামেলাপূর্ণ মনে হয়।

তাদের কাছে এর চেয়ে সহজ মুঠোফোনের বোতাম চেপে নববর্ষের খুদে বার্তা পাঠানো। বছরের শেষ দিন থেকে মুঠোফোন থেকে মুঠোফোনে এমন অসংখ্য খুদে বার্তা চালাচালি এখন জনপ্রিয়।

মন্তব্য করুন

মন্তব্য করেছে

 
 
 
 
 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক : মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল
আশ্রম মার্কেট ২য় তলা, জেলা সদর রোড, বটতলা, টাঙ্গাইল-১৯০০।
ইমেইল: dristytv@gmail.com, info@dristy.tv, editor@dristy.tv
মোবাইল: +৮৮০১৭১৮-০৬৭২৬৩, +৮৮০১৬১০-৭৭৭০৫৩

shopno